ঢাকা ০৬:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুড়িগ্রামে বন্যায় ৪ লাখ মানুষ পানিবন্দি, চারজনের মৃত্যু

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:২০:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ অগাস্ট ২০১৭
  • ২২৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কুড়িগ্রাম জেলায় বন্য পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার নদীর পানি অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজ সোমবার সকালে ধরলা নদীতে ১৩২ সেন্টিমিটার এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার ও দুধকুমার নদীর পানি বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিভিন্ন স্থান থেকে বন্যায় দুজনের মৃত্যু এবং দুজন নিখোঁজ হবার সংবাদ পাওয়া গেছে। পানিতে ডুবে মারা গেছেন রায়গঞ্জের মনসুর (১৪) ও ফুলবানু (১৩)।

রাজারহাটের ছিনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুজাম্মান বুলু জানান, রাতে কালুয়ারচর ওয়াপদা বাঁধ ভেঙে যাওয়ার সময় রিফাত (১০) ও লোকমানের স্ত্রী (৩২) পানির তোড়ে ভেসে গেছে। এখন পর্যন্ত তাদের লাশ পাওয়া যায়নি।

তিনি আরও জানান, সদরের কাঁঠালবাড়ীর বাংটুরঘাট, রাজারহাটের কালুয়া ও ফুলবাড়ীর গোড়কমন্ডল এলাকায় বাঁধ ছিঁড়ে যাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ আকার ধারণ করেছে। বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে নতুন করে আরেও ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় আজ সোমবার সকালে টগরাইহাট গ্রামের বড়কুলের পার এলাকায় রেল ব্রিজের গার্ডার ধসে পড়ছে। এর ফলে সারা দেশের সাথে রেল চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

তা ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে সড়ক ভেঙে যাওয়ায় এবং এর ওপর পানি ওঠায় জেলার সাথে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে।

ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজাম্মান জানান, উপজেলার ৬০টি ইউনিয়নের প্রায় ৪ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে ৬০৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখন আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ছাড়া পানিতে ডুবে ৮৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় তীব্র স্রোতে প্রায় শতাধিক পরিবারের বাড়িঘর ভেসে গেছে। ৪২ হাজার হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত হয়েছে।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান জানিয়েছেন, বন্যা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বন্যাকবলিত উপজেলাগুলোতে ২৫০ মেট্রিক টন চাল আর ৫ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের কাছে নতুন করে ২ হাজার মেট্রিক টন চাল, ৫০ লাখ টাকা ও ৩০ হাজার শুকনো খাবার বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

কুড়িগ্রামে বন্যায় ৪ লাখ মানুষ পানিবন্দি, চারজনের মৃত্যু

আপডেট টাইম : ০১:২০:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ অগাস্ট ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কুড়িগ্রাম জেলায় বন্য পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার নদীর পানি অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজ সোমবার সকালে ধরলা নদীতে ১৩২ সেন্টিমিটার এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার ও দুধকুমার নদীর পানি বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিভিন্ন স্থান থেকে বন্যায় দুজনের মৃত্যু এবং দুজন নিখোঁজ হবার সংবাদ পাওয়া গেছে। পানিতে ডুবে মারা গেছেন রায়গঞ্জের মনসুর (১৪) ও ফুলবানু (১৩)।

রাজারহাটের ছিনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুজাম্মান বুলু জানান, রাতে কালুয়ারচর ওয়াপদা বাঁধ ভেঙে যাওয়ার সময় রিফাত (১০) ও লোকমানের স্ত্রী (৩২) পানির তোড়ে ভেসে গেছে। এখন পর্যন্ত তাদের লাশ পাওয়া যায়নি।

তিনি আরও জানান, সদরের কাঁঠালবাড়ীর বাংটুরঘাট, রাজারহাটের কালুয়া ও ফুলবাড়ীর গোড়কমন্ডল এলাকায় বাঁধ ছিঁড়ে যাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ আকার ধারণ করেছে। বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে নতুন করে আরেও ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় আজ সোমবার সকালে টগরাইহাট গ্রামের বড়কুলের পার এলাকায় রেল ব্রিজের গার্ডার ধসে পড়ছে। এর ফলে সারা দেশের সাথে রেল চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

তা ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে সড়ক ভেঙে যাওয়ায় এবং এর ওপর পানি ওঠায় জেলার সাথে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে।

ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজাম্মান জানান, উপজেলার ৬০টি ইউনিয়নের প্রায় ৪ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে ৬০৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখন আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ছাড়া পানিতে ডুবে ৮৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় তীব্র স্রোতে প্রায় শতাধিক পরিবারের বাড়িঘর ভেসে গেছে। ৪২ হাজার হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত হয়েছে।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান জানিয়েছেন, বন্যা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বন্যাকবলিত উপজেলাগুলোতে ২৫০ মেট্রিক টন চাল আর ৫ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের কাছে নতুন করে ২ হাজার মেট্রিক টন চাল, ৫০ লাখ টাকা ও ৩০ হাজার শুকনো খাবার বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।